বাংলার নয়ন সংবাদঃ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রকিবুল হাসানের দূর্নীতির বিরুদ্বে বিক্ষোভ মিছিল, মানব বন্ধন ও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে কিছু সময় অবস্থান করে। পরে উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেয় । এ সময় তারা বিভিন্ন ধরনের লেখা প্লাকার্ড প্রদর্শন করে বিক্ষোভ করে। বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: কাবির মিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম মোল্যা আন্দোলনকারীদের এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বিক্ষোভ মিছিল শেষ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্কুল চত্বরে একাধিকবার বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা ।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ রকিবুল হাসান স্কুলে নানা ব্যাপারে দূর্নীতি করে আসছে। ২০২০ সালের জে এস সি পরীক্ষায় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেন। রেজাল্ট আশার পর দেখাযায়, ১২ জন শিক্ষার্থীর রেজাল্ট, মুকসুদপুর পৌরসভার প্রভাকরদী হাজী ছখিউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে এসেছে। প্রশংশা পত্র নেওয়ার সময় বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রকিবুল হাসান এর প্রতিষ্ঠিত প্রভাকরদী হাজী ছখিউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশংসা পত্র দেয়া হয়। প্রশংশা পত্রে স্বাক্ষর করেন বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রকিবুল হাসান। এসকল ছাত্ররা বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র। কিভাবে অন্য স্কুলে ফরমফিলাপ হল আর প্রশংশা পত্র বা কিভাবে আরেক স্কুলের থেকে হয়। একে করে তাদের পরবর্তীতে কোন স্কুলে ভর্তির সময় এবং পড়াশোনা শেষে চাকুরীর ক্ষেত্রে নানা সমস্যায় পড়তে হবে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, প্রধান শিক্ষক রকিবুল হাসান দূর্নীতি করে তাদেরকে সমস্যার সমমূখীন করেছেন। তিনি এ্যাসাইনমেন্ট জমা নেওয়ার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ২০ টাকা করে এবং এ্যাসাইনমেন্ট সময় মত জমাদিতে না পারলে আরো ২০ টাকা জরিমানা নেয়া হয়। জে,এসসি এবং এস এসসি ফরমফিলাপের সময় অতিরিক্ত টাকা নেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা বিধ অভিযোগের পাহাড় জমে আছে। প্রধান শিক্ষকের ছত্র ছায়ায়, অত্র স্কুলের শিক্ষক রনজিৎ সেন ও শামিমা বেগম কোচিং বানিজ্য করে। কোন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে না চাইলে পরীক্ষায় ফেল করাবে বলে হুমকি দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক রঞ্জিত দত্ত জানান, এব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না। আমি ৫ বছর প্রাইভেট পড়াইনা। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তীহিন কথা বলা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক যে কাজ করেছে এটাও মেনে নেয়া যায়না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, এতে আমি জড়িত নেই। আমার প্রধান শিক্ষক যা করতে বলেছে আমি সেটাই করেছি।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক রাকিবুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করলেও তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বরং বিভিন্ন তালবাহানা করে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

প্রভাকরদী হাজী ছখিউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আযাদ জানান, আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকায় শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য বোয়ালিয়া নিজামউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থীর রেজিষ্ট্রেশন আমাদের বিদ্যালয় থেকে করা হয়েছে। তারা কখোনো আমাদের স্কুলে ক্লাস করেনি। তারা ওই স্কুলেই ক্লাস করেছে সার্টিফিকেট আমার স্কুলের নামে বোর্ড থেকেই হয়েছে এখানে কোন ভুল হয়নি।

স্কুল কমিটির সদস্য মোহাম্মাদ অলি মিয়া জানান, এ্যাসাইনমেন্ট জমা নেওয়ার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ২০ টাকা করে এবং এ্যাসাইনমেন্ট সময় মত জমাদিতে না পারলে আরো ২০ টাকা জরিমানা নেয়া হয়। প্রধান শিক্ষকের ছত্র ছায়ায়, অত্র স্কুলের শিক্ষক রনজিৎ সেন ও শামিমা বেগম কোচিং বানিজ্য করে। কোন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে না চাইলে পরীক্ষায় ফেল করাবে বলে হুমকি দেয়।

অত্র স্কুলের সভাপতি মোঃ কাজী ফিরোজ জানান, স্কুলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে এটা সত্য। ঘটনার প্রেক্ষিতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এ বিষয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করা হবে না আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যপারে মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাদৎ আলী মোল্যা জানান, এখন ও কোন অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ্যাসাইনমেন্টের জন্য জরিমানার কোন সুযোগ নেই, যদি কেউ নেয় তার বিরুদ্বে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।